বাঘারপাড়ার ধুপখালি প্রথম ডিজিটাল গ্রাম হবে !
বাঘারপাড়া (যশোর) : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে যশোরের জেলা প্রশাসক ড. মো. হুমায়ুন কবীরের ভূমিকা সর্বজনপ্রসংশিত। 'আলোর ফেরিওয়ালা' কিংবা 'স্বপ্নের ফেরিওয়ালা' নামেও অভিহিত তিনি। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথও কখনো কখনো বাতলে দেন তিনি। লন্ডনপ্রবাসী এমনই এক স্বপ্নবাজ যুবকের আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপ দিতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন নন্দিত এ জেলা প্রশাসক।
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধুপখালি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বাবর আলীর ছেলে মেহেদী হাসান টিটো। লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে পাড়ি জমান সুদূর ইংল্যান্ডে। সেখানে থাকাকালে মানুষের জন্য কিছু করার প্রবল আগ্রহ জন্মায় এ যুবকের। মাস ছয়েক আগে লন্ডনে তার সঙ্গে পরিচয় হয় যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীরের। তখনই টিটো জানান তার ইচ্ছের কথা। টিটোর ইচ্ছা, ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশ হিসেবে নিজভূমি বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের ধুপখালির দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে সহযোগিতার আশ্বাসও পান। সে অনুযায়ী সম্প্রতি দেশে এসে মেহেদী হাসান টিটো নিজ উদ্যোগে ধুপখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ধুপখালি ইসলামিয়া মাদরাসায় গড়ে তোলেন কম্পিউটার ল্যাব। আগামী তিন বছর এ ল্যাবটি চলবে টিটোর গাঁটের টাকায়। স্কুলটিতে একজন কম্পিউটার শিক্ষক ও একজন নাইটগার্ডও নিয়োগ দেওয়া হবে। যাদের বেতন দেওয়া হবে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা বাবর আলীর ভাতার টাকায়। বাবা-ছেলের এই উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত ধুপখালিবাসী।
টিটো বলেন, ‘প্রথম ডিজিটাল জেলা যশোর। আর প্রথম ডিজিটাল গ্রাম ধুপখালি করার মানসেই আমার এ উদ্যোগ।’
মঙ্গলবার সকালে কম্পিউটার ল্যাব দুটি উদ্বোধন করতে এসে জেলা প্রশাসক ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এগিয়ে এসেছেন প্রবাসী মেহেদী হাসান টিটো। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে তার মতো সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে, শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘সন্তানরাই আমাদের বড় সম্পদ। তাই তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হলে দায়িত্বশীল হতে হবে। ছেলেমেয়ে ঠিকমতো ঘরে ফিরেছে কি না সেদিকে নজর রাখতে হবে।’ এসময় জেলা প্রশাসক স্কুলের নিজস্ব পাঁচ একর জমিতে মিনি স্টেডিয়াম তৈরির প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় ধুপখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা বাবর আলী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ও বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহনাজ বেগম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাঘারপাড়া থানার ওসি ছয়রুদ্দীন আহমেদ, নারিকেলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের আবুল সরদার, বাঘারপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর হোসেন, ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে উল্লিখিত দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. মো. হুমায়ুন কবীর। সূত্রঃ-অনলাইন।
কোন মন্তব্য নেই